ফিলিস্তিনের গাজার উদ্দেশ্যে ইতালি থেকে রওনা দিয়েছে ত্রাণবাহী একটি নতুন নৌবহর। শনিবার ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় সিসিলি শহর থেকে ১০টি নৌযান নিয়ে শুরু হওয়া এই বহরে রয়েছেন ৬০ জন অংশগ্রহণকারী, যাদের মধ্যে ৯টি দেশের নির্বাচিত প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত আছেন বলে জানিয়েছে আয়োজক সংস্থাগুলো।

এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (FFC) এবং থাউজেন্ড মেডলিনস টু গাজা (TMTG)। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নৌযানগুলোয় রয়েছে চিকিৎসা সামগ্রী, শুকনো খাবার এবং শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম। সংগঠনগুলো স্পষ্ট করে বলেছে—ইসরায়েলের ‘অবৈধ অবরোধ’ উপেক্ষা করে সরাসরি গাজায় এই ত্রাণ পৌঁছে দেওয়াই তাদের লক্ষ্য।

গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতি

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬৬ হাজার ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজার। অবরোধের কারণে খাবার, পানি, জ্বালানি ও চিকিৎসা সামগ্রীর তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। শুধু অনাহারেই গত দুই বছরে শিশুসহ প্রায় ৪০০-এর বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে।

আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ

ইতালি থেকে যাত্রা শুরু করা বহরটি শিগগিরই যুক্ত হবে আরেকটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা-র সঙ্গে। সেই বহরেও আছেন যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের প্রতিনিধিরা, এমনকি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরাও। এতে রয়েছেন সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ।

তবে এই বহর বারবার হামলার মুখে পড়েছে। চলতি মাসেই তিনবার ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে, সর্বশেষটি মঙ্গলবার। হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও এর পেছনে ইসরায়েলের সম্পৃক্ততার সন্দেহ রয়েছে, কারণ শুরু থেকেই ফ্লোটিলা অভিযানের তীব্র বিরোধিতা করে আসছে দেশটির সরকার। ইসরায়েলের অভিযোগ, ফ্লোটিলা সংশ্লিষ্ট কর্মীদের সঙ্গে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের যোগসাজশ আছে।

অতীতের অভিজ্ঞতা

এর আগে গত জুনে গাজার উদ্দেশ্যে যাওয়া এফএফসির একটি নৌযান ‘ম্যাডলিন’ আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে আটক করে ইসরায়েলি সেনারা। তখন নৌযানে গ্রেটা থুনবার্গসহ ১২ জন অধিকারকর্মী ছিলেন। জুলাইয়ে আটক হয় আরও একটি নৌযান ‘হান্দালা’, যেখানে ছিলেন ১০ দেশের ২১ জন অংশগ্রহণকারী। এসব ঘটনার পর ইসরায়েল তীব্র আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়ে।