নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পুলিশ কনস্টেবল পাপেল হাসানের বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে, যৌতুক দাবি এবং স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ তুলে তার তৃতীয় স্ত্রী হাফিজা আক্তার আঁখি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।


রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে বদলগাছীর বিষ্ণুপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন হাফিজা আক্তার আঁখি।


তিনি জানান, ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর পারিবারিকভাবে কনস্টেবল পাপেল হাসানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বাড়ি মেরামতের কথা বলে তার পরিবারের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা যৌতুক নেওয়া হয়।


বিয়ের পর তারা বগুড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পাপেল তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন এবং কিছুদিন পর ভাড়া বাসা ছেড়ে দেন। প্রায় সাত মাস পর পাপেল নতুন কর্মস্থল বগুড়ার সারিয়াকন্দির চন্দন বাইশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে যোগ দিলে আবার সংসার শুরু হয়।


কিন্তু সেখানেও স্বামী হিসেবে দায়িত্ব না নিয়ে শুরু করেন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। বিষয়টি জানালেও পাপেলের পরিবার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন হাফিজা।


তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে পাপেল আবারও ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় তাকে মারধর করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন এবং ভরণপোষণ বন্ধ করে দেন। এরপর তালাকের হুমকিও দেন।


কিছুদিন পর হাফিজা জানতে পারেন, পাপেল এর আগে আরও দুটি বিয়ে করেছেন এবং যৌতুকের কারণে তাদেরও তালাক দিয়েছেন। একই কৌশলে তাকে গোপনে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন।


এসব ঘটনায় তিনি বগুড়া ও পাবনা জেলা পুলিশ সুপার, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টারে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু কোনো পক্ষই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বরং মৌখিকভাবে পারিবারিকভাবে মীমাংসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।


পাপেলের প্রথম স্ত্রী সোনালী আক্তার বলেন, “পাপেলের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। পুলিশে চাকরি পেতে আমার বাবার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নেওয়ার পর বিয়ে হয়। কিন্তু কিছুদিন পরই পাপেল তালাক দিয়ে নতুন জীবন শুরু করেন। তিনি অত্যন্ত অর্থলোভী মানুষ।”


এ বিষয়ে জানতে চাইলে কনস্টেবল পাপেল হাসান বলেন, “আমি সরকারি চাকরি করি, কেন ভরণপোষণ দিব না? আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে, তদন্ত চলছে। এর বেশি কিছু বলবো না।”


সংবাদ সম্মেলনে হাফিজা আক্তারের বাবা রকিব উদ্দিন, চাচা রফিকুল ইসলাম, চাচাতো ভাই জহুরুল ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।