চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের খুলশী থানায় যমুনা টেলিভিশনের দুই সাংবাদিককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করেছেন চ্যানেলটির রিপোর্টার জোবায়েদ ইবনে শাহাদাত, যিনি দাবি করেছেন— খুলশী থানা জোনের ডিসি (উত্তর) আমিরুল ইসলাম তাকে “ফ্যাসিস্ট” আখ্যা দিয়ে থানার কক্ষে ডেকে নিয়ে ব্যাপক মারধর করেন এবং গায়েব করে ফেলার হুমকি দেন।


শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। ঘটনার পর রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে মারধরের শিকার সাংবাদিকের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়।


ভিডিওতে দেখা যায়, আহত জোবায়েদ খুলশী থানার সামনে দাঁড়িয়ে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন। তিনি জানান, নগরীর জিইসি কনভেনশন হলে সংবাদ সংগ্রহের সময় তার মানিব্যাগ ও অফিস আইডি হারিয়ে যায়। সে কারণে তিনি থানায় হারানো জিডি করতে গিয়েছিলেন। সেখানে গ্রেপ্তার হওয়া এক পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডিসি আমিরুল ইসলাম হঠাৎ চড়াও হয়ে তাকে থানা কক্ষে নিয়ে যান এবং মারধর করেন।

জোবায়েদ বলেন,

“আমি বলেছিলাম, আপনি এমন আচরণ করতে পারেন না। তখন তিনি চিৎকার করে বলেন, ‘তুই ফ্যাসিস্ট, আমি তোকে মারিনি, শয়তানকে মেরেছি। বেশি কথা বললে গায়েব করে ফেলব।’”


এ সময় তার সঙ্গে থাকা যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন আসাদুজ্জামান লিমনকেও হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ।ঘটনার পর চট্টগ্রামের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা খুলশী থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।


চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার বলেন,

“একজন সাংবাদিককে থানার ভেতরে নির্যাতন করা জঘন্য অপরাধ। আমরা সিএমপি ডিসি (উত্তর) আমিরুল ইসলামের অবিলম্বে প্রত্যাহার ও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।”


চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিউজে) সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ বলেন,

“যে কক্ষে সাংবাদিককে নির্যাতন করা হয়েছে, সেই কক্ষের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ প্রকাশ করতে হবে। ডিসি আমিরুল যদি নির্দোষ হন, তিনি সামনে এসে ব্যাখ্যা দিন।”


টিভি সাংবাদিক নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক হোসেন জিয়া বলেন,

“রাষ্ট্রের আইন অনুসারে সাংবাদিকরা সব জায়গায় কাজ করতে পারেন। কোথাও প্রবেশে বাধা বা হেনস্তা বেআইনি। সাংবাদিকের ওপর হামলা বরদাশত করা হবে না।”


এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ডিসি (উত্তর) আমিরুল ইসলাম ফোন রিসিভ করেননি।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) শ্রীমা চাকমা বলেন,

“ঘটনাটি তদন্তে কমিশনার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবিরকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”